একটি টিম তৈরির বেসিক ফান্ডামেন্টাল ,কাজকাম বেশি হওয়ার কারণে অনেক সময়ই আমরা ফাইবার অথবা আপওয়ার্ক ক্লায়েন্টের অতিরিক্ত কাজের ঠেলা সামলাতে পারিনা।
বিশেষ করে ফাইবারে যখন আমাদের গিগ গুলোর রেংক করে তখন ক্লায়েন্টের সাথে চ্যাট করতে করতেই সময় চলে যায় এবং কয়েকটা কাজ নিয়েই ভ্যাকেশন মোড অন করতে হয়।টিম তৈরির বেসিক ফান্ডামেন্টাল
কিন্তু যদি আপনার একটি সুস্থ এবং পরিকল্পিত টিম থাকে তাহলে শুধুমাত্র আপনি ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং অথবা ডিসকাস করেই মাল্টিপল কাজ একসাথে করতে পারবেন আপনার টিম এর সাহায্যে।
অনেকদিন ধরে এই টিম কিভাবে তৈরি করব সেটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন তাই আজকে এটা নিয়ে কথা বলবো।
প্রথমত কথা হচ্ছে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনি একটি টিমকে চালানোর মত ক্ষমতা রাখেন কিনা ?
কথা হচ্ছে কি কি ক্ষমতা লাগবে?
প্রথমত আপনার সাথে পর্যাপ্ত ক্লায়েন্টের আনাগোনা থাকতে হবে এবং আপনার সব সময় হট প্রজেক্ট সম্ভাবনা রাখতে হবে।
যদি আপনার ক্লায়েন্ট এর সাথে লং রিলেশনশিপ অথবা ক্লায়েন্ট অ্যাকুইজিশন কম থাকে তাহলে আমার সাজেশন হচ্ছে দু একজনের সাথে পার্টনারশিপে কাজ করে প্রথমে নিজের ক্লায়েন্ট মার্কেটিং এবং সেলস প্রসেসকে শক্ত করা।
আপনি ঠিকমতো কাজই পান না তাহলে টিমকে কিভাবে পর্যালোচনা করবেন?
তারপরে সবচেয়ে মোস্ট ইম্পর্টেন্ট ব্যাপার হচ্ছে আপনার কাজের প্রাইস বৃদ্ধি করার মত মন মানসিকতা এবং ক্যাপাবিলিটি থাকা।
যদি আপনি আপনার সার্ভিসের কোন কারণে প্রাইস বৃদ্ধি করতে না পারেন অথবা আপনার সার্ভিস এর প্রাইস বৃদ্ধি করলে ক্লায়েন্টরা না থাকে তাহলে আপনি কখনোই টিম তৈরি করতে পারবেন না আর যদিও কোন ভাবে তৈরি করেন তাহলে সেই টিম বেশি দিন টিকে থাকবে না।
টিম তৈরি করার জন্য আপনার অবশ্যই সার্ভিসের কোয়ালিটি এমন হতে হবে যেটাতে আপনি দিনে পরিক্রমায় নিজের প্যাকেজের প্রাইস অথবা সার্ভিস প্রাইস বৃদ্ধি করতে পারবেন আপনার কোয়ালিটি এবং এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ী।
যখন আপনি ক্লায়েন্টের কাছে হাই প্রাইস চার্জ করতে পারবেন ঠিক তখনই আপনার টিম মেম্বারদের আপনি পেমেন্ট দিয়ে খুশি রাখতে পারবেন আর যখন আপনার নিজের প্রাইস কম থাকবে তখন টিম মেম্বারদের কিভাবে খুশি করবেন?
আপনার কোম্পানিতে একটি টিমে যখন একজন লোক কাজ করে তার প্রথম এবং সর্বশেষ এক্সপেক্টেশন থাকে টাকা।
কেউ যদি মাগনা করে দেয় তাহলে সে মহা মানুষ তার কথা নাই বলি।
কিন্তু ম্যাক্সিমাম টাকার জন্যই আপনার টিমে চাকরি করবে অথবা আপনার টিম মেম্বার হিসেবে যোগদান করবে।
তাই অবশ্যই আপনাকে রিসার্চ করে এবং কোয়ালিটি টেস্ট করে করে কম্পিটিটরদের সাথে আপনার প্রাইস প্যাকেজ বাড়াতে হবে যাতে করে আপনি আপনার টিমের এক্সপেক্টেশন ফুলফিল করতে পারেন এবং তাদেরকে বোনাস অথবা ইন্সেন্টিভ এর মাধ্যমে সব সময় কাজের প্রতি উৎফুল্ল রাখতে পারেন।
উপরে যে দুটি বিষয় সম্পর্কে আমি কথা বললাম এই দুটি বিষয়ে যদি আপনার না থাকে তাহলে টিম তৈরীর কথা ভুলে যান।
এখন আবার জিজ্ঞাসা করবেন যে কিভাবে বেশি বেশি ক্লায়েন্ট আর কিভাবে প্রাইস তৈরি করব এর জন্য আমি আপনাদের এজেন্সি বেশ ক্লায়েন্ট পাওয়া এবং প্রাইস বৃদ্ধির ভিডিও সিরিজ তৈরি করছি তা আপনারা আস্তে আস্তে পেয়ে যাবেন।
কিন্তু যারা আপওয়ার্ক এবং ফাইবার মিলে একটি ভালো অবস্থানে আছেন তারা বাকি অংশ পড়ে দেখতে পারেন।
টিম তৈরি প্রথম শর্ত হচ্ছে আপনার নিজেকে আগের টেস্ট করা যে একটা টিমের মন মানসিকতা এবং তাদের এক্সপেক্টেশন আপনি জানেন কিনা।
এখন আপনি আগে যেহেতু কখনো টিম তৈরি করেননি তাহলে আপনি অনেক ধরনের সমস্যায় পড়বেন যেমন ধরেন অনেকেই এসে বলবে সে অনেক স্কিলড এবং অনেকদিন ধরে কাজ করছে কিন্তু তার সাথে যখন কাজ করতে যাবেন তখন দেখবেন সে ঘোড়ার মাথা কিচ্ছু জানেনা।
কিন্তু মাস কোনো একভাবে পার করে আপনার কাছ থেকে সেলারি চাইছে।
তাহলে প্রথমে তো অবশ্যই আপনাকে স্কিলড হতে হবে এবং আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে একজেক্টলি আপনার একজন টিম মেম্বার কি কাজ করবে।
সেটার একটা কমপ্লিট ডকুমেন্ট আপনাকে তৈরি করতে হবে এবং ফেক ডকুমেন্ট অবশ্যই অরগানাইজ হতে হবে।
আমি টিম নিয়ে কাজ করছি 2015 সাল থেকে এবং এই পর্যন্ত যত মানুষের সাথে কাজ করেছি তাদের একেকজনের একেক ধরনের সমস্যা আমি দেখেছি এবং সেই সমস্যাগুলো একটা ফ্রেন্ডকে নিয়ে এসে এখন আমি টিম নিয়ে কাজ করি যেখানে আমার হেসেল খুব কম পোহাতে হয়।
আমার যে এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আছে সে এখন সব প্রোজেক্ট হ্যান্ডেল করে আর যেখানে ক্লায়েন্টের সাথে শুধু মিটিং এবং ক্লোজিং ছাড়া আমার কোন কাজ থাকেনা ।
এই এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আমার টিমের সকল মেম্বারদের কাজের আপডেট নেয় এবং ক্লায়েন্টকে কাজের আপডেট দিয়ে দেয় এবং সে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর দেখাশোনা করে।
যাইহোক এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার নেওয়ার সময় টা হয়তোবা প্রথমে আপনাদের হবে না কারণ আপনাদের নিজেদের আগে বুঝতে হবে যে কিভাবে একটা টিমকে হ্যান্ডেল করতে হয় তারপর আপনার অভিজ্ঞতা আপনি একজন এসিস্টেন্ট কে শিখিয়ে কাকে দিয়ে করাবেন।
তো যেটা বলছিলাম আপনাকে একটি অর্গানাইজড লিস্ট তৈরি করতে হবে যে সে শুধু স্পেসিফিক এতোটুকু কাজ করবে।
ধরেন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং নিয়ে কাজ করেন এখন আপনি চিন্তা করলেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার নেবেন যেকোনো এমাউন্ট এর মাসিক সেলারি তে।
তো আপনি এখন জব রিকোয়ারমেন্ট দিলেন যে লোগো ডিজাইনার প্রিন্টিং ডিজাইন ব্যানার ডিজাইন ফ্লাওয়ার ডিজাইন ডিজাইন ইত্যাদি।
একটু ভালো করে লিস্ট যদি লক্ষ করে দেখেন তাহলে দেখবেন আপনি পুরো একটা গ্রাফিক্স টিম এর রিকোয়ারমেন্ট দিয়ে দিলেন।
একবার ভালো করে ভেবে দেখুন আপনি নিজে কি সবগুলো বিষয়ে এক্সপার্ট? হয়তোবা আপনি সবগুলো বিষয় সম্পর্কে জানেন এবং শিখেছেন কিন্তু আপনি কি সবগুলো বিষয় নিয়েই কাজ করে এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করতে পেরেছেন?
আমি জানি ম্যাক্সিমাম মনে মনে উত্তর দিচ্ছেন “না”
আপনি নিজেও সবগুলো বিষয়ে এক্সপার্ট না হ্যাঁ হয়তো বা এক্সপেরিয়েন্সের ভারে আপনি অনেক কিছুই শিখিয়েছেন অথবা ক্লায়েন্টের প্রেসারে আপনাকে অনেক কিছুই জানতে হয়েছে কিন্তু আপনি নিজেও সবগুলো বিষয় নিয়ে সব সময় কাজ করেন না এবং আপনার খুব একটা এক্সপেরিয়েন্স ও নেই।
আপনি যে কোন একটা বিষয়ের উপর অনেক দক্ষ হতে পারেন ঠিক তেমনি ভাবে আপনার টিম মেম্বার যে থাকবে থাকে যেকোনো একটি বিষয়ের উপর আপনি যাচাই বাছাই করবেন যে সে ওই বিষয়ে দক্ষ কিনা।
যদি আপনার একটি স্কিলের উপর মাল্টিপল টাইপ কাজ থাকে তাহলে আপনাকে মাল্টিপল টাইপ টিম মেম্বার হায়ার করতে হবে।
একজন লোগো ডিজাইনার যদি প্রিন্টিং মেটেরিয়াল নিয়ে কাজ করে তাহলে হয়তোবা সে কাজ করতে পারে কিন্তু তার সাথে যদি সে বলে যে সে ইউআইইউ এক্স ডিজাইন নিয়েও কাজ করতে পারবে তাহলে আমি মনে করি তার সাথে কাজ করা একটা মহাপাপ।
এটা শুধুমাত্র আমার ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা এবং যদি বলি যত বড় বড় ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট আছেন তারা এই ধরনের টিম মেম্বারদের কে ছাটাই করার পরামর্শ দিয়ে রাখেন।
একটা লোক কখনোই মাল্টিপল বিষয়ের উপর ইলন মাস্ক হতে পারে না আর ইলন মাস্ক দুনিয়াতে একটা দুইটাই হয়।
তাই টীম মেম্বার্স সিলেকশনের আগে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে আপনার যে টিম মেম্বার হবে সে একজেক্টলি কোন কাজটা করবে এবং সে শুধুমাত্র ওই কাজে এক্সপেরিয়েন্সড কিনা।
আপনাদের মাথা এখন ঘুরঘুর করছে যে মাঝেমধ্যে এক্সট্রা কিছু ছোট ছোট ব্যাপার থাকে যেগুলো প্রোজেক্টের ল্যাঞ্জা হিসেবে কাজ করে তখন তাকে খুশি করার জন্য ওই বিষয়টা সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হয়।
আপনি যে সার্ভিস টা দিবেন সেই সার্ভিস কোন ক্লায়েন্ট এর প্রয়োজন তা আপনাকে আগে বুঝতে হবে তারপর ঠিক সেই প্ল্যান কি আপনার সার্ভিসটা দিতে হবে এখন আপনি যদি ভার্সেটাইল সার্ভিস ক্লায়েন্টদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে এটা আপনার বিজনেস মডেলের সর্বপ্রথম এবং সর্বস্বান্ত ভুল।
যদি আপনি টিম তৈরি করতে চান এবং একটি সুস্থ বিজনেস শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার স্পেসিফিক স্কিলের উপর সার্ভিস দিতে হবে এবং আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে ঠিক কোন ক্লায়েন্টকে আপনি যদি সার্ভিস দেন তাহলে আপনাকে ভার্সেটাইল সার্ভিস দিতে হবে না।
এখন আবার প্রশ্ন আসবে যে ভাই ক্লায়েন্ট কখন কী চাইবে তার ঠিক নেই তাহলে কি করব?
তাহলে আমি বলব আপনার বিজনেস মডেল ঠিক নেই এবং আপনি জানেন না কিভাবে বিজনেস মডেল এবং প্লানিং করে ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করতে হয়।
যেমন আমি যদি বলি আমার এজেন্সিতে কোন পয়েন্ট আমাকে ভার্সেটাইল সার্ভিস দেওয়ার অফার করে না কারণ আমি জানি যে আমি কতটুকু কাজ করতে পারব এবং আমার টিম মেম্বাররা কি কি করতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী আমি কোন কোন ক্লারকে সার্ভিস দিব।
আমি শুধুমাত্র সেই সব ক্লায়েন্ট কেই সার্ভিস দিয়ে থাকি।
তাই আপনাকে প্রথমেই ক্লায়েন্ট নিস এবং বিজনেস মডেল ঠিক করতে হবে তারপর সেই অনুযায়ী আপনাকে এসএমএস দিতে হবে তাহলে আপনিও জানতে পারবেন যে আপনাকে কি সার্ভিস আপনার টিম মেম্বাররা দিবে।
এবং আপনার টিম মেম্বাররা খুব সহজেই আপনার বিজনেস মডেল ধরে নিতে পারবে যা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে একটি টিম কে দিয়ে কাজ করানো।
টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকগুলো পরিধি আছে সবগুলো ব্যাপার নিয়ে হয়তো বা একটি আর্টিকেলে বলা সম্ভব নয়।
তাই আপনাদের ধাপে ধাপে কয়েকটি টিম ম্যানেজমেন্ট মডেল সম্পর্কে ধারণা দিব অন্যান্য আর্টিকেল গুলোতে যেখানে আপনি একটি বেসিক ফান্ডামেন্টাল ঠিক করে আপনার টিম তৈরি করতে পারবেন।