ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ভুল – শেষ পর্ব
ফাইবারে গিগ তৈরি করার সাথে সাথেই যেমন আপনি কাজ পেয়ে যেতে পারেন ঠিক তেমনি সঠিক তৈরি করতে না পারলে কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এখন বলতে পারেন যে কিভাবে বুঝব সঠিক দিক কোনটা?
আপনি সঠিক নাকি বেঠিক সেটা বোঝার জন্য আপনাকে অন্যের সহযোগিতা নিতে হতে পারে অথবা অন্যের সঠিক পন্থা গুলো নিজের মধ্যে নিয়ে তারপর তার পন্থা অনুযায়ী চলতে হবে অথবা অনুসরণ করতে হবে যেটার দ্বারা আপনি বুঝতে পারবেন আপনি সঠিক না বেঠিক।
কিভাবে আরেকজনকে অনুসরণ করবেন?
ফাইভারে অনুসরণ করার জন্য আসল ব্যাপারটা হচ্ছে কে কত বেশি অর্ডার পাচ্ছে এবং কার ইনকাম কত বেশি।
তাই যদি আপনি এটার উপর বিবেচনা করে অনুসরণ করেন তাহলে আপনার একজন ছেলেকে বের করতে হবে যার ইনকাম বেশি এবং যার অর্ডার অনেক বেশি তাকে দিয়ে রিসার্চ শুরু করতে হবে।
এখন কথা হচ্ছে যে কোন একজন সেলার কে টার্গেট করে রিসার্চ করবেন?
অবশ্যই না
প্রথমত আপনাকে কিছু জিনিস নোট করতে হবে এবং আপনার নিজের সম্পর্কে জানতে হবে।
১) আপনি কি নিয়ে কাজ করেন? ওয়েব ডিজাইন, ফেসবুক এড, ভিডিও এডিটিং অথবা যেকোনো কিছু।
২) আপনি যে কাজটি করেন সেই কাজের স্যাম্পেল গুলো আপনার কাছে রেডি আছে কিনা।
৩) যদি পারেন আপনার এই কাজটি একজেক্টলি সবচেয়ে বেশি কার কাজে লাগতে পারে সেটা খুঁজে বের করুন। যেমন ধরুন আপনি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নিয়ে কাজ করেন তাহলে আপনার এই কাজটি যারা মোটিভেশনাল স্পিকার, প্রফেসর, রাইটার তাদের কাজে লাগতে পারে। তাই কে একজেক্টলি আপনার কাজের জন্য উপযুক্ত তাকে খুঁজে বের করতে হবে। আপনার সার্ভিস হয়তোবা দুনিয়ার সবার কাজে লাগতে পারে কিন্তু দুনিয়ার সবাই আপনার সার্ভিস কাজে লাগবে সেটা ভাবতে নাও পারে।
কিভাবে রিচার্জ শুরু করা উচিত?
যদি আপনার উপরের তিনটি বিষয় গোছানো থাকে তাহলে এবার রিসার্চ করা শুরু করে দিন ফাইবারের সেলার দের গিগ নিয়ে।
প্রথমত, আপনি যে কাজটি নিয়ে কাজ করছেন ঠিক সেই কাজের গিগ কীওয়ার্ড নির্বাচন করুন।
এখন আপনি ভাবতে পারেন যে কি ধরনের গিগ কীবোর্ড নির্বাচন করব?
বিভিন্ন কাজের বিভিন্ন কিওয়ার্ড হয়ে থাকে তাই আমি স্পেসিফিক্যালি কোন কিওয়ার্ড এর কথা বলতে পারছিনা।
শুধু আপনাকে বুঝতে হবে ফাইবারে একটি বায়ার কি লিখে সার্চ করতে পারে আপনাকে খুঁজে বের করার জন্য।
এখন আপনি যদি নাই জানেন যে আপনার কাজের চাহিদা কাদের কাছে সবচেয়ে বেশি তাহলে হয়তোবা আপনি এই ব্যাপারটি বুঝতে পারবেন না কারণ আপনি জানবেন না যে চাহিদা অনুযায়ী কে কি লিখে সার্চ করতে পারে।
অনেকেই ভাবতে পারেন সার্চ করার নিয়মটা গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মতোই হতে পারে কিন্তু আসলে তা সম্পূর্ণ ভুল।
যেকোনো একটি মন্ত্রণালয়ের ধরুন খাদ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ে মানুষ ব্যবসায় অথবা খাদ্যের বিভিন্ন ইনফর্মেশন জোগাড় করতে যেতে পারে।
কিন্তু বাজারে মানুষ যে ইনফর্মেশন জোগাড় করে না সেখানে যে মানুষ সরাসরি পণ্যটি কিনে নিয়ে আসে।
ফাইবার মার্কেটপ্লেস এবং গুগল সার্চের মধ্যে তেমনি তফাৎ রয়েছে তাই আপনাকে বুঝতে হবে ফাইবার মার্কেটপ্লেস এ মানুষ কি লিখে সার্চ করতে পারে আপনাকে খুঁজে বের করার জন্য।
দ্বিতীয়ত, সার্চ করার পর হাতের ডান সাইডে যে ড্রপডাউন ফিল্টারটি ( Sort by ) আছে সেটিতে ক্লিক করুন।
তারপর “Best selling” অপশনটিতে ক্লিক করুন তারপর প্রথম সারিতে দেখুন কারা কারা আছে তেমনি ভাবে দ্বিতীয় তৃতীয় সারি চেক করুন।
যাদের রিভিউ এর পরিমাণ বেশি তাদের গিগ গুলো অপেন করুন।
তারপর দেখুন যে কাদের গিগে রানিং অর্ডারের পরিমাণ বেশি ঠিক তাদের লিংকগুলো একটি নোটে কপি করে রাখুন।
তৃতীয়তঃ এই সব ছেলেদের কি কি ফিচার আছে সেগুলো কমেন্ট করুন এবং লিস্ট করুন তারপর কম্পেয়ার করুন।
কম্পেয়ার করে বের করুন কোন গিগে কি আছে এবং কোন গিগে কি নেই।
তারপর তাদের ফিচারগুলোর কম্পারিজন থেকে ভালো করে একটি ফিচার বানান যেগুলো আপনার দিকে দিয়ে বায়ারকে সার্ভিস দিবেন।
তারপর এই ফিচার গুলোর উপর বেইজ করে গিগের ডেসক্রিপশন এবং ইমেজ তৈরি করুন।
চতুর্থ হচ্ছে আপনার প্রাইস, এখন বাকি সব সেলারের প্রাইসের এভারেজ করে আপনাকে এমন একটি প্রাইস বসাতে হবে যা অন্যদের তুলনায় একটু কম এবং যদি আপনার ফিচার তাদের থেকে বেশি থাকে তাহলে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়।
গিগের প্রাইস অনেক বড় একটা ব্যাপার, যা আমরা অনেকেই লক্ষ্য করি না।
তাই আপনাকে অবশ্যই একটি কম্পিটিটিভ ফিচার তৈরি করে কম্পিটিটিভ বলিয়ম প্রাইস দিতে হবে যেখানে ক্লায়েন্ট দেখে ইমপ্রেস হবে এবং সে প্রাইস দেখে রিজনেবল মনে করবে।
অনেকেই আবার 5 অথবা 10 ডলার বসানোর চিন্তা-ভাবনা করতে পারেন আসলে এই প্রাইসের সংখ্যা গুলো এখন ফাইবারে অনেক লো লেভেলে তাই একটি 50 ডলারের গিগের সাথে যদি আপনি পাঁচ ডলারের গিগ পাবলিশ করেন তাহলে গিগের ভ্যালু অনেক কমে যাবে একজন ক্লায়েন্টের কাছে।
তাই সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন একটি গিফট তৈরি করুন যেটা জায়গা ক্লায়েন্ট আপনাকে মেসেজ অথবা অর্ডার দিবে।
সোজাসাপ্টা যদি বলি মাইক্রোসফ্ট তৈরি করা হয়েছিল মেক থেকে। আরো সোজা সাপ্টা বললে মাইক্রোসফ্ট মেক থেকে সবকিছুই কপি-পেস্ট করেছিল এবং মেকের থেকে আরো ভালো ফিজার দিয়েছিল সহজে।
যদিওবা স্টিভ জবস এর কাছ থেকে মাইক্রোসফট এর মালিক বিলগেটস অনেক কথাই শুনেছে এই কপি-পেস্টের কারণে কিন্তু দিন শেষে বিল গেটস ধনীদের কাতারে প্রথম ছিল অনেক বছর।
তাই আপনি যদি বিল গেট্স এর মত আরেকজনের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তার পন্থা অবলম্বন বা অনুসরণ করে নিজেকে পরিচালনা করতে পারেন তাহলে হয়তোবা আপনি তার মত না হতে পারলেও সফলতার কিছুটা হলেও চেহারাটা দেখতে পাবেন।
আমি বলছি না অন্য ছেলের দিকে কপি করেন কারণ কপি করার কারনে আপনার একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যেতে পারে।
অন্য সেলার দের গিগ গুলো অনুসরণ করুন এবং সেই গুলো অনুসরণ করে তাদের থেকে আরো ভালো গিগ তৈরি করুন তাহলেই আপনি ভালো কাজ পেতে পারেন।
আশাকরি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ভুল এই পরবর্তী আপনাদের অনেক কাজে লেগেছে যদি আগের পর্বগুলো পড়ে না থাকেন তাহলে পর্ব গুলো পড়ে নিন আশা করি যারা একদম নতুন আছেন তাদের কাজ পেতে তেমন কোনো অসুবিধে হবে না।