আমরা অনেকেই মনে করি যে ফাইবার একাউন্ট খোলার সাথে সাথেই আমরা কাজ পেয়ে যাব কিন্তু একাউন্ট খোলার পর মাসের পর মাস যখন বসে থাকি তখন হতাশ হয়ে পড়ি। ভাবতে থাকি কখন কাজ পাব, অথবা ফাইবারে হয়তোবা আমার ভাগ্য এখনো খোলেনি।
আসলে ফাইবার টা হচ্ছে একটি গেমিং এর মতো এখানে আপনি হেরেও যেতে পারেন অথবা জিতে যেতেও পারেন।
বাংলাদেশি ফ্রীলান্সিং বলতেই আমরা বুঝি শুধু ফাইবার আর আপওয়ার্ক, আর এটাই আমাদের ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার প্রথম ভুল ধারণা।
শুধু ভুল ধারণা বললে ভুল হবে এটি একটি মারাত্মক ভুল।
আমরা ফাইবার একাউন্ট খোলার পর মাসের-পর-মাস বসে থাকি কখন ক্লায়েন্ট আমাদেরকে মেসেজ দিবে।
কিন্তু আমরা কখনই চেষ্টা করিনা যে কিভাবে ক্লায়েন্টকে মেসেজ করে কাজ বাগিয়ে নিয়ে আসা যায়।
ফাইবারের যেমন আমরা অটোমেটিক্যালি মেসেজ পাই ঠিক তেমনি যদি আমরা একটি অটোমেটিক সিস্টেম করে নেই যেটা দ্বারা ক্লায়েন্টদের আমরা অলওয়েজ মেসেজিং করতে পারব মার্কেটপ্লেস এর বাহিরে থেকে তাহলে কেমন হয়?
ভুলের মাশুলঃ মার্কেটপ্লেস এর ভিতর যেভাবে আমাদের কাজ করা উচিত
এখন কথা চলে আসবে যে মার্কেটপ্লেসের বাহিরে থেকে কিভাবে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করবেন আসলে এটা অনেক বিস্তর একটি ব্যাপার এগুলো নিয়ে পরে কথা হবে আর এটাও একটা অনেক বড় রহস্য এখন।
কিন্তু এই মার্কেটের ভিতর থেকে কিভাবে ক্লায়েন্টকে মেসেজ পাঠানো যায় এবং রেগুলার কাজ পাওয়া যায়?
আপনারা ফাইবারের পাশাপাশি আপওয়ার্ক এবং freelancer.com এও অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
ধরেন আপনার গিগ ডাউন হয়ে গেল অথবা রেঙ্কিং কমে গেল তাহলে সাথে সাথে আপওয়ার্ক অথবা freelancer.com এ কাজ করা শুরু করে দিন।আপওয়ার্ক অথবা freelancer.com এর সুবিধা হচ্ছে এখানে ক্লায়েন্ট জব পোস্ট করবে এবং আপনি ইচ্ছামত সেই সকল জবে এপ্লাই করে ক্লায়েন্টকে ইমপ্রেস করে কাজ নিয়ে আসতে পারবেন।
তার মানে হচ্ছে ফাইবারে আপনি অটোমেটিক্যালি অর্ডার পাচ্ছেন এবং সাথে অন্যান্য মার্কেটপ্লেস থেকেও নিজের ইচ্ছে মত কাজ করছেন।
আপওয়ার্ক অথবা freelancer.com ধরে নিবেন আপনার রেগুলার আর্নিং আর fiverr.com হচ্ছে আপনার প্যাসিভ আর্নিং। ফাইভার যখন গিগ আপ করবে তখন দেখবেন ডলার এর বন্যা বয়ে যাচ্ছে।
Get clients and hold clients নিয়ে একটি প্রোগ্রাম শুরু করা হবে যেখানে শুধু বিস্তারিত আলোচনা করা হবে যে কিভাবে মার্কেটপ্লেস থেকে আনলিমিটেড হাই অ্যামাউন্ট বাজেট এর ক্লায়েন্টের সাথে ডিল করা যায়। কিভাবে একজন ফ্রিল্যান্সারকে একটি পূর্ণাঙ্গ এজেন্সি কোম্পানিতে তৈরি করা যায় শুধু মার্কেটপ্লেস থেকে। আট বছরে আমরা পারসনালি যে যে ভুল করেছি মার্কেটপ্লেসগুলোতে সেই সকল ভুল কিভাবে আপনারা করবেন না এবং কিভাবে আপনাদের নিজেদের করা উচিত সেগুলো এই প্রোগ্রামের মূল বিষয় এবং আশা করি এই প্রোগ্রামটি হবে সকল ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোগ্রাম যেখানে প্রতিটা ফ্রিল্যান্সার তাদের ইচ্ছেমতো একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবে এবং নিজেদেরকে বিজনেসম্যান হিসেবে তৈরি করতে পারবে।
আমার ওয়েবসাইট অলরেডি প্রোগ্রামের মডিউলগুলো দেওয়া হয়েছে তাই দেখে আসতে পারেন একনজরে।
ভুল গিগ তৈরি করা
ফাইবারের দ্বিতীয় ভুল হচ্ছে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর কোন প্রকার রিসার্চ না করেই শুরু করে দেওয়া
গিগ তৈরি
আপনি যদি সঠিক গিগ তৈরি করেন তবুও আমি বলব আপনি ভুল গিগ তৈরি করেছেন
এখন আপনি বলতে পারেন যে আপনার গিগ না দেখে কিভাবে আমি বুঝে গেলাম যে আপনি ভুল গিগ তৈরি করেছেন?
আসলে আমি তাদের কথা বলছি যারা মাসের-পর-মাস বসে থেকেও ফাইবারে কোন অর্ডার বা মেসেজ পাচ্ছে না।
প্রবলেমটা হচ্ছে আমরা সবাই যথারীতি অন্য যে সকল বড় বড় টপরেটেড সেলার আছে তাদের গিগ গুলো কপি করে তৈরি করার চেষ্টা করি।
কপি বলতে তাদের সেইম সার্ভিস টাই আমরা দেওয়ার চেষ্টা করি।
এতে করে প্রচুর পরিমাণে কম্পিটিশন তৈরি হয় এবং ফাইবারের অ্যালগোরিদম অনুযায়ী গিগের রেংকিং ডাউন হতে থাকে।
যখন আপনার কম্পিটিশন বেশি থাকবে তখন ফাইবার অ্যালগরিদম আপনার টা একবার উপরে রেখে নিয়ে আসবে আরেকবার একদম নিচে নিয়ে যাবে।
তাই আমাদের উচিত এমন কিছু সার্ভিস রিচার্জ করে বের করা যে সার্ভিস গুলো কম্পিটিশন কম এবং চাহিদা কম্পিটিশন এর থেকে বেশি।
ধরেন এর চাহিদা 50 জনের রয়েছে কিন্তু কম্পিটিশন রয়েছে 30 জনের তাহলে আপনার অন্তত ফোরটি পার্সেন্ট চান্স আছে ওই কম্পিটিশনে টিকে থাকা এবং নিজের রেংকিং বৃদ্ধি করে উপরে চলে যাওয়া।
কিন্তু আপনি গিগ তৈরি করছেন ঐসকল কিওয়ার্ড নিয়ে যে সকল কিওয়ার্ডে কম্পিটিশন আছে 20 হাজার আর চাহিদা আছে 2 লাখ।
এখন আপনি চিন্তা করতে পারেন যে দুই লাখের থেকে 20000 অনেক কম কিন্তু ভাই একজন মানুষ একসাথে 5 থেকে 6 টি প্রজেক্ট করতে পারে তখন দেখবেন 20000 দিয়ে গুণ দিলে যদি 20 লাখ আসে তাহলেও ব্যাপার না আর বিশ হাজারের মধ্যে আপনি একটা পুটি মাছ ছাড়া আর কিছুই না।
তাই সোজাসাপ্টা বলছি হাই কম্পিটিশন গুলো ছেড়ে দিয়ে একটু লো কম্পিটিশন এগুলো বের করুন যার চাহিদা কিছুটা হলেও আছে এবং সেগুলো দিয়ে একটু একটু করে রেঙ্ক বারিয়ে বারিয়ে বেশী বেশী কাজ করে অন্য হাই কম্পিটিশন গিগগুলোতে রিভিউ নিয়ে নিয়ে ওগুলোকে রেংকিং করেন।
এরপরেও যদি না বুঝেন তাহলে বুঝে নিবেন আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে হবে।
কারণ আপনি যখন স্কিল ডেভেলপমেন্ট করবেন তখনই বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন এবং বিভিন্ন কিছু সার্ভিস আপনার মাথায় আসবে।
মনে রাখবেন প্রত্যেকটি ছোট ছোট সার্ভিস হচ্ছে প্রত্যেকটি ছোট ছোট আইডিয়া য়ার আইডিয়া গুলো থেকে আপনি বিভিন্ন টাইপের সার্ভিস ফাইবারের সেল করতে পারবেন।
আর যদি স্কিল ডেভেলপমেন্ট না করেন তাহলে আপনার মাথায় এই আইডিয়া গুলো আসবে না এবং আপনি লো কম্পিটিশন গিগ তৈরি করতে পারবেন না।
ফাইবারের বিভিন্ন গিগ কম্পিটিশন এবং এর বিভিন্ন দিক গুলো নিয়ে একদম গভীরভাবে আলোচনা করার জন্য আরেকটি সিরিজ শুরু করা হবে কিন্তু এর আগে আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা দ্বারা “ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ভুল পর্বগুলো” সমাপ্তি হবে।
ফাইবারের রিসার্চ নিয়ে আরো অনেক বিষয়ে কথা বলব নেক্সট আর্টিকেলে আসলে এই বিষয়টা অনেক বড় হবে তাই আজকে এই পর্যন্তই থাকুক।